ভেনিজুয়েলার বিপক্ষে মেসির জোড়া গোল, জয় দিয়ে বাছাইপর্ব শেষ করল আর্জেন্টিনা
ফুটবল মাঠে আর্জেন্টিনার জয়রথ ছুটছেই। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে ভেনিজুয়েলার বিপক্ষে ৩-০ গোলের সহজ জয় পেয়েছে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। দলের এই জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক লিওনেল মেসি, করেছেন জোড়া গোল। বুয়েনস আইরেসের মাস মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবারের এই ম্যাচটি ছিল আর্জেন্টিনায় অনুষ্ঠিত মেসির সম্ভাব্য শেষ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ, যা পুরো পরিবেশকে করে তুলেছিল আবেগঘন।
ঘরের মাঠে মেসির আবেগঘন রাত
ম্যাচ শুরুর আগেই এক আবেগঘন মুহূর্তের সাক্ষী হন দর্শকরা। জাতীয় সংগীতের সময় তিন সন্তানকে সামনে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখে অশ্রুসিক্ত হয়ে ওঠেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসি। পুরো ম্যাচ জুড়েই সতীর্থরা চেষ্টা করেছেন তাদের অধিনায়ককে সেরা উপহার দেওয়ার।
ম্যাচের ৩৯ মিনিটে হুলিয়ান আলভারেজের পাস থেকে দলকে এগিয়ে দেন মেসি। এরপর ৭৬ মিনিটে মেসির নেওয়া ফ্রি-কিক থেকে তৈরি হওয়া আক্রমণে হেডের মাধ্যমে গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন লাউতারো মার্তিনেজ। ম্যাচের ৮০ মিনিটে থিয়াগো আলমাদার পাস থেকে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করে দলের বড় জয় নিশ্চিত করেন মেসি। ৮৯ মিনিটে তিনি হ্যাটট্রিকও প্রায় পেয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু অফসাইডের কারণে তার গোলটি বাতিল হয়ে যায়। এই ম্যাচটি ছিল দক্ষিণ আমেরিকান বাছাইপর্বে মেসির ৭২তম ম্যাচ, যা এই অঞ্চলে একজন খেলোয়াড়ের জন্য সর্বোচ্চ।
ভবিষ্যৎ নিয়ে যা বললেন মেসি
এই ম্যাচটি আর্জেন্টিনায় তার শেষ ম্যাচ কি না, এমন জল্পনা থাকলেও ম্যাচ শেষে মেসি নিজে জানিয়েছেন, তিনি এখনই অবসরের ঘোষণা দিচ্ছেন না। আটত্রিশ বছর বয়সী এই তারকা বলেন, “আমি চাই না এটা কখনও শেষ হোক, কিন্তু আমি জানি সেই মুহূর্তটি ঘনিয়ে আসছে। যখন হওয়ার, তা হবেই। আপাতত আমি প্রতিটি দিন ধরে এগিয়ে যাচ্ছি।”
অন্যদিকে, আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি জানিয়েছেন, মেসি চাইলে তার জন্য আবারও ঘরের মাঠে ম্যাচ আয়োজন করা হবে। তিনি বলেন, “যদি তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে এটিই আর্জেন্টিনায় তার শেষ ম্যাচ, আমরা নিশ্চিত করব যে তিনি যেন আরও একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পান। কারণ এর যোগ্য তিনি।”
শুধু ফুটবল নয়, ফুটসালেও আর্জেন্টিনার দাপট
ভেনিজুয়েলার বিপক্ষে এই দুর্দান্ত জয়ের মাধ্যমে ফুটবলে আর্জেন্টিনার সাম্প্রতিক সাফল্যের ধারা অব্যাহত রইল। তবে শুধু ফুটবলই নয়, এর ছোট সংস্করণ ফুটসালেও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে হারিয়ে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে আলবিসেলেস্তেরা। কিছুদিন আগেই ফুটসাল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলকে ২-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল আর্জেন্টিনা।
সেই ম্যাচে ১১ মিনিটে ভাপোরাকি এবং ১৩ মিনিটে বরুত্তোর গোলে আর্জেন্টিনা এগিয়ে যায়। ব্রাজিলের পক্ষে একমাত্র গোলটি করেন ফেররাও, যিনি টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতাও হয়েছিলেন। ফুটবল এবং ফুটসাল—উভয় ক্ষেত্রেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে পেছনে ফেলে আর্জেন্টিনার এই সাফল্য দলটির সোনালি সময়ের কথাই মনে করিয়ে দেয়।